ভালো মন্দ মিলিয়েই আমাদের জীবনের ছন্দ। এই ছন্দ বুঝার জন্য আমাদের জীবনকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে নিলে সুবিধা হয়। জীবনকে যতটা সম্ভব সুখকর করার জন্য নিচে ৫০ টি টিপস্ দেয়া হলো।
১ম ভাগ : করিও না ভুল কারন, স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল
১. প্রবাদ আছে, সকালের খাবার খাবেন রাজার মত, দুপুরের টা খাবেন রাজকুমারের মত আর রাতের টা খাবেন ভিখারীর মত মানে কম পরিমানে।
২. প্রচুর পরিমানে পানি পান করুন।
৩. যে খাবার গাছে জন্মায় সেটা বেশি খাবেন, যেটা ফ্যাক্টরীতে জন্মায় সেটা কম খাবেন।
৪. যে প্রাণীর পা যত বেশি সেটা শরীরের জন্য তত বেশি ক্ষতিকর, যেমন, মুরগীর পা দুইটি, তার চেয়ে বেশি আছে গরু-ছাগলের চারটি, এবং তাদের চেয়েও বেশি পা আছে চিংড়ি, কাকঁড়ার, অক্টোপাস ইত্যাদি। তাই, গোশতের চেয়ে মাছ খাওয়া অধিক উত্তম (চিংড়ি বাদে)।
৫. অতিরিক্ত খাবার বা অতিরিক্ত ডায়েট কোনোটাই ঠিক নয়।
৬. সূর্যের মত আলো ছড়াঁতে চাইলে সূর্যের আগে ঘুম থেকে উঠতে হবে।
৭. প্রতিরাতে ৭ ঘন্টা অবশ্যই ঘুমাবেন।
৮. দাঁত ব্রাশ করার সময় আয়নার দিকে তাকিয়ে মন খুলে হাসুন। প্রতিটি দিন সৃষ্টিকর্তার দান। দিনটা হাসিমুখে কৃতজ্ঞচিত্তে শুরু করুন। প্রতিদিন ১০-৩০ মিনিট হাঁটবেন হাসি মুখে।
২য় ভাগ: স্বার্থ ছাড়াই কাজ করে যাই, জ্ঞান নিয়ে আগে বেঁড়ে যাই
৯. গত বছরের তুলনায় এই বছর বেশী বেশী বই পড়–ন।
১০. দৈনিক অন্তত ১০ মিনিট একাকী নির্জনে কাটান। নিজেকে নিয়ে চিন্তা করুন।
১১. প্রতিদিন যে ব্যাক্তি পুরো দৈনিক সংবাদ পত্র পড়ে সে বর্তমান দুনিয়া ও সমাজ সম্পর্কে আশে পাশের সবার চাইতে জ্ঞানী হয়ে উঠে। তাই দৈনিক সংবাদ পত্র পড়তে হবে।
১২. রাস্তার যানজটে সময়কে কাজে লাগানোর জন্য ব্যাগে বই রাখুন, রাখলেই পড়া হবে।
১৩. লেখালেখি চর্চা করুন, অনলাইনে লেখা প্রকাশের অবারিত সুযোগ আছে।
১৪. ফেসবুক স্ট্যাটাসে সুন্দর সুন্দর গঠনমূলক (সংক্ষিপ্ত) লেখা দিন। মানুষ পড়ে আপনার চিন্তা ও ব্যাক্তিত্য সম্পর্কে ধারনা পাবে।
১৫. মনে রাখুন, যে জীবন হচ্ছে পাঠাগারের মত যেখানে আপনি মৃত্যু পর্যন্ত শিখবেন। সমস্যা আসবেই কারন সেটাই পরীক্ষা, যত শিখবেন ভালো তত ভালো পরীক্ষা দিতে পারবেন।
১৬. নি:স্বার্থ ভালোবাসা মানেই প্রকৃত ভালোবাসা।
৩য় ভাগ : সব শত্রু হয়ে যাবে মিত্র, যদি থাকে সুন্দর নিজ চরিত্র
১৭. সৃষ্টিকর্তাকে সবসময় মনে করুন, ভালো-মন্দ, হালাল-হারাম, যায়েজ-নাজায়েজ বুঝুন।
১৮. নিজের দোষ-গুন লিখিতভাবে যাচাই করবেন।
১৯. ৪টি বিষয় মনে রাখবেন: সত্য,সহমর্মিতা, সহযোগীতা, শক্তি
২০. কখনোই কারো সাথে নিজেকে তুলনা করবেন না। সবার শুরু আর শেষ একসাথে হয় না। সবার ভাগ্য, জীবন, চাহিদা এক না।
২১. নেতিবাচক চিন্তা বাদ দিয়ে জীবনের প্রতি মুহর্ত কাজে লাগানোর পরিকল্পনা নিন। যে বেশি কাজ করে সে নেতিবাচক চিন্তা করে কম।
২২. খুব বেশি দুশ্চিন্তা করা যাবে না, নিজে কোন কোন বিষয়গুলো নিয়ে বেশি চিন্তা করেন সেটা নিয়েও একটু খেয়াল বা লক্ষ্য করবেন।
২৩. সব বিতর্কে জিততে হবে এমন কোন কথা নেই, এটা শেষ হয় কারো মনে কষ্ট দিয়ে।
২৪. হিংসা করা সময় অপচয়। আপনার যা আছে অনেকের তা নেই, আবার হিংসা করলে যা নেই তা পেয়ে যাবেন না।
২৫. জীবন ঘৃনা করার জন্য তৈরী হয়নি। রক্তের শিরায় ঘৃনা যেন না পৌছে যায়, তাহলে আপনার হৃদয় বিশুদ্ধ থাকবে না।
২৬. নি:স্বার্থভাবে ভালোবাসা মানেই মন দিয়ে ভালোবাসা। মানুষকে মন দিয়ে ভালোবাসুন।
২৭. সর্বদা হাসিমুখে থাকার অনুশীলন করুন। হাসুন আর বাচুঁন।
২৮. জাগ্রত অবস্থায় বেশি স্বপ্ন দেখুন। স্বপ্নগুলো তাহলে বাস্তবসম্মত হবে।
২৯. অতীতকে অতীতেই রাখুন। আপনার প্রিয়জনের ও আপনার কষ্টের অতীতকে বর্তমানে টেনে আনবেন না। বর্তমান সময়টা যেন সুখকর অতীত হয় সেটা নিয়ে ভাবুন।
৩০. সৃষ্টিকর্তা ব্যাতীত আপনার সুখের চাবিকাঠি একমাত্র একজনের হাতে আর সে হচ্ছেন আপনি নিজে।
৪র্থ ভাগ : বেশি বেশি সামাজিকতা, এটাই এখন আধুনিকতা
৩১. ‘আমি অসামাজিক এটাই ভালো ! ’ এইসব ফালতু কথা বাদ দিয়ে সামাজিক হবার চেষ্টা করুন। সমাজের ভিতরে থেকে অসামাজিক হওয়া মানে নিজের কারাগার তৈরী করা।
৩২. পরিবারকে সময় দিন। দিন শেষে তাদেরকেই পাশে পাবেন।
৩৩. প্রতিদিন পরিবারের সদস্যদের জন্য ভালো কিছু করুন।
৩৪. সবাইকে ক্ষমা করে দিন মন থেকে একেবারে ঝেঁড়ে ফেলুন। কারন, আপনার এতো দামী মন কেন বাজে জিনিস দিয়ে ভরাট করবেন।
৩৫. বাইরের মানুষ, প্রতিবেশি কি চিন্তা করছে সেটা আপনার একেবারেই চিন্তায় আনবেন না।
৩৬. বেশি মানুষ একত্রিত অবস্থায় আড্ডা দিন, আলোচনা করুন, ব্রেইনস্টোর্মিং করুন।
৩৭. প্রতিদিন ৩ জন, ৫ জন বা এর ও বেশি মানুষের মুখে হাসি ফোটাবার জন্য মজার কিছু করতে পারেন।
৩৮. ছুটির দিনে বা অবসর সময়ে সুযোগ পেলে খেলাধুলা করুন।
৩৯. নিজেকে এতো সিরিয়াসলি নেয়ার কিছু নেই, যদি আপনাকে অন্য কেউ সিরিয়াসলি না নেয়।
৪০. পরিবার ছাড়া আপনার দিকে সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কে দিবে আপনি যখন অসুস্থ ও অসহায় থাকেন? তাই, পরিবারকে বেশি প্রায়োরিটি দিতে হবে।
৫ম ভাগ: এড়িয়ে জীবনের ব্যার্থতা যত, নিজের জীবনকে করুন উন্নত
৪১. সবসময় সঠিক কাজটি করুন।
৪২. যে কাজ কারো উপকারে আসবেনা বা কারো ভালো লাগবে না সেই কাজে সময় নষ্ট করবেন না।
৪৩. রাগী বা উত্তেজিত অবস্থায় কোন স্বিদ্বান্ত নেয়া যাবে না। ঠান্ডা হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন বা একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। হতে পারে ৩ থেকে ৬ ঘন্টা বা এক দিন।
৪৪. ক্ষমা শুধু অপরকে নয় নিজেকে করুন, আপনার দ্বারা যে সব ভুল গুলো হয়ে গেছে।
৪৫. বর্তমান অবস্থা যত খারাপই থাকুক না কেন ঘাবড়াবেন না, সময়ের ধর্ম বা বৈশিষ্ট্যই হলো পরিবর্তনশীল। ভালো সময়ও ক্ষনস্থায়ী আবার খারাপ সময়ও ক্ষনস্থায়ী তাই অপেক্ষা করুন অযথা রাগের মাথায় ধ্বংসাত্মক কিছু চিন্তা করবেন না।
৪৬. ভালো কিছু খুব সন্নিকটে এ কথাটা সবসময় ভাবুন।
৪৭. সকালে ঘুম থেকে উঠে নিজেকে জড়িয়ে ধরুন, যেন মনে হয় নিজের জীবনকে জড়িঁয়ে ধরছেন।
৪৮. আপনি সুখী হবেন যদি এই কথাটা বিশ্বাস করেন তাহলে আপনি বর্তমানে সুখী এই কথাটাও একদিন চলে আসবে।
৪৯. প্রতিটি মুহুর্তকে কাজে লাগান বা উপভোগ করুন কারন, আগামী মুহুর্ত আপনি নাও দেখতে পারেন।
৫০. সর্বদা স্মরন করবেন, আজকের দিনটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন, কারন আপনি খোলা চোখে আজকের সময়টাকে দেখছেন। আজকের জন্য হলেও হাসুন, আজকের জন্য হলেও বাঁচুন, আজকের জন্য হলেও ক্ষমা করে দিন সবাইকে। কেননা, হতে পারে আজকের দিনটিই আপনার শেষ দিন।